SIR ‘আতঙ্কে’ ফের মৃত্যু হুগলির গৃহবধূর, চিকিৎসাধীন ছয় বছরের মেয়ের
বর্তমানে সারা রাজ্য জুড়ে চলছে SIR নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যে সমস্ত ব্যক্তির নাম নেই তাদের 2025 সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকবে না বলে জানানো হয়েছে এবং তারা বৈধ ভোটার হিসাবে পরিচিত হবেন না অর্থাৎ তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এমনটাই জানা যাচ্ছে। এছাড়াও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে যে ১১ টি নথিপত্রের কথা বলা হয়েছে সেই নথিপত্রের মধ্যেও যদি কোন একটি না থাকে তাহলেও সেই ব্যক্তির নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে একটা আতঙ্কের ভয়াবহতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আতঙ্কের মধ্যে অনেকের স্ট্রোক হয়েছে এবং অনেকেই আত্মহত্যার মতন পথ বেছে নিচ্ছেন। এমনই এস আই আর আতঙ্কের মধ্যে থেকে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন হুগলির ধনিয়াখালির এক গৃহবধূ। তার ছয় বছরের মেয়েকে সাথে নিয়েই তিনি বিষ পান করেন। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার, ধনিয়াখালি থানার অন্তর্গত সোমসপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কানা নদী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন আশা সোরেন। (SIR ‘আতঙ্কে’)
সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, দশ বছর আগে তার বিয়ে হয়ে ছিল এবং তিনি বিয়ে হয়ে এসেছিলেন হরিপালে। কিন্তু স্বামী ও স্বামীর পরিবারের সাথে মতানৈক্য থাকার জন্য তিনি বেশ কিছু বছর ধরে বাপের বাড়িতেই থাকছিলেন। এর জন্য শ্বশুরবাড়িতে কোন ফর্ম দেওয়া হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়নি। গত রবিবার দিন মহিলার বাড়িতে এনিউমারেশন ফর্ম দিতে এসেছিলেন বিএলও। পরিবারের সবাইকে ফর্ম দেওয়া হলেও ওই গৃহবধূকে কোন ফর্ম দেওয়া হয়নি। এরপর থেকে তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েন। তার মধ্যে আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। এরপরেই তিনি চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তার ছয় বছরের মেয়েকে সঙ্গে করে। (SIR ‘আতঙ্কে’)
বিষ খাওয়ার পরে পরিবারের লোকেরা দ্রুত তাকে এবং তার মেয়েকে ধনিয়াখালির একটি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার জন্য তাকে ট্রান্সফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে ভর্তি করা হলে সোমবার দিন সেই গৃহবধুর মৃত্যু হয়। জানা যাচ্ছে, ছয় বছরের মেয়ের অবস্থা এখন বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। (SIR ‘আতঙ্কে’)
SIR আতঙ্কে ফের মৃত্যুর অভিযোগ, এইবার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলো নদিয়ায়, জানুন বিস্তারিত
মৃত গৃহবধূর দাদা অমর মুর্মু জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে ভোটার তালিকায় বোনের নাম ছিল কিন্তু সাংসারিক অশান্তির জন্য তিনি চার বছর ধরে বাপের বাড়ি ধনিয়াখালিতেই থাকছিলেন মেয়েকে নিয়ে। এজন্য বাপের বাড়ির পরিবারের সবাইকে SIR ফর্ম দেওয়া হলে তার বোন ফর্ম পাননি। তার দাদা জানায়, তিনি বোনকে আশ্বস্ত করেছিলেন, অনলাইনে ফর্ম বার করে দেবেন কিন্তু এই নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলেন তার বোন। কিন্তু এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন পরিবারের কেউ বুঝতে পারেননি। (SIR ‘আতঙ্কে’)
ক্রমাগত এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আত্মহত্যা বা মৃত্যুর খবর আসছে। এর জন্যই পরিবারের সদস্যরা এবং গ্রামের অন্যান্য সদস্যরা জানিয়েছেন এসআইয়ের সম্পর্কে যা আতঙ্ক মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে সেগুলো নিবারণ করার চেষ্টা করা উচিত এবং স্পষ্ট বার্তা দেওয়া উচিত যাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাসা না বাধে, না হলে এভাবে অকালে অনেক মানুষের প্রাণ চলে যাবে। (SIR ‘আতঙ্কে’)
